ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার বিএস ডাংগী, স্বাধীনতা চত্বর সংলগ্ন ব্রিজের গোড়ার বাসিন্দা মো: ইব্রাহীম একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ মানুষ। সংসারে স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে দিন পার করেন তিনি। জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিল তাঁর অটোচালকের পেশা। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কেনা সেই অটো দিয়েই সংসার চলত।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—গত শুক্রবার তিনি তাঁর ভাগ্নির বিয়ের দাওয়াতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে লোহারটেক যান। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য রাস্তার পাশে অটো রেখে বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে ফিরে এসে দেখেন, অটোটি আর সেখানে নেই। বহু খোঁজাখুঁজি করেও অটোর কোনো সন্ধান মেলেনি। এর আগে আরেকটি অটোও একইভাবে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে এক প্রতিবন্ধী মানুষকে দুষ্কৃতকারীরা বারবার টার্গেট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অটো হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইব্রাহীম। সংসারের ভরণপোষণ, তিন কন্যা সন্তানের ভবিষ্যৎ ও ঋণের কিস্তি শোধ করা—সবকিছু নিয়ে তিনি দারুণ বিপাকে পড়েছেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক সহানুভূতি ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
এই পরিস্থিতির খবর পেয়ে কিশোর আলো যুব সংগঠনের সভাপতি নাইফ আদনান সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করেন অসুস্থ ইব্রাহীমের সাথে। কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। শুধু কথায় নয়, কার্যত ইব্রাহীমের পাশে দাঁড়াতে পরের দিন সকালে কিশোর আলো যুব সংগঠনের ১৪ সদস্যের একটি টিম তাঁর বাড়িতে ছুটে যায়।
সংগঠনের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সজীব ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইব্রাহীমের জন্য একটি সহায়তা প্যাকেজ পৌঁছে দেন। এর মধ্যে ছিল—এক বস্তা চাল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি তেল, ৫ কেজি আটা, ২ কেজি লবণ, গুঁড়া সাবান, গোসলের সাবান, মুড়ি ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
এছাড়া সংগঠনের সদস্যরা ইব্রাহীমের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং স্থানীয়দের সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করেন। সবাই একবাক্যে জানান, ইব্রাহীম সত্যিই একজন অসহায় মানুষ। তাঁর জীবনে একের পর এক দুর্যোগ নেমে আসছে, অথচ তিনি প্রতিবন্ধী হয়েও সৎভাবে শ্রম দিয়ে সংসার চালানোর চেষ্টা করছিলেন।
মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কিশোর আলো যুব সংগঠনের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই এলাকাজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে শুধু সংগঠন নয়, সমাজের বিত্তবান ও দানশীল মানুষদেরও আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে তাঁরা এই অসহায় মানুষটির পাশে দাঁড়ান।
যোগাযোগ নম্বর: ০১৭৫৩৮২৯৪৭৫ (মো: ইব্রাহীম)